নজরদারিতে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির বিরুদ্ধে যেকোনো সময় ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি।
সত্যনিউজ রিপোর্টঃ
সতর্ক করার পরও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা থেকে বের হতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। বরং এসব নামসর্বস্ব কোম্পানিতে তাদের আস্থা বাড়ছে। যার জেরে এ ধরনের কোম্পানির আধিপত্য কমছে না। কিছুতেই টেনে ধরা যাচ্ছে না এসব কোম্পানির দরবৃদ্ধির লাগাম। তবে এসব কোম্পানিতে যাদের বিনিয়োগ রয়েছে, তাদের ‘মূলধারার বিনিয়োগকারী’ বলতে নারাজ বাজার-সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, এখানে দু’ধরনের বিনিয়োগকারী রয়েছেন। তাদের একটি কারসাজিচক্র, অন্যটি হচ্ছে কিছু হুজুগে বিনিয়োগকারী।
ঝুঁকিপূর্ণ এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করার জন্য সম্প্রতি ১৫টি কোম্পানিকে সতর্ক করেছে ডিএসই। তিনটি প্রতিষ্ঠানের লেনদেন স্থগিত করেছে বিএসইসি কর্তৃপক্ষ।
স্পট মার্কেটে পাঠানো হয় আরও কয়েকটি কোম্পানিকে। কিন্তু তারপরও কমেছে না এসব প্রতিষ্ঠানের দরবৃদ্ধির দাপট।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গতকালও দরবৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করা এসব ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানি হলো- সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ, সমতা লেদার, কে অ্যান্ড কিউ, দুলামিয়া কটন, আজিজ পাইপস ও জুট স্পিনার্স। এর মধ্যে আজিজ পাইপস ছাড়া বাকি পাঁচ কোম্পানি ডিএসইর সম্ভাব্য তালিকাচ্যুতির তালিকায় রয়েছে। আর অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কারণে আজিজ পাইপসকে স্পট মার্কেটে স্থানান্তর করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এছাড়া গতকাল দরবৃদ্ধির তালিকায় ছিল জুট স্পিনার্স, মুন্নু সিরামিক, শ্যামপুর সুগারসহ আরও কিছু কোম্পানি। গতকাল ১০ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির প্রথম অবস্থানে ছিল সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ। এছাড়া ১০ শতাংশ বেড়ে দ্বিতীয় স্থানে আজিজ পাইপস, ১০ শতাংশ বেড়ে তৃতীয় স্থানে সমতা লেদার। একইভাবে ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে চতুর্থ স্থানে কে অ্যান্ড কিউ, ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে পঞ্চম স্থানে দুলামিয়া কটন ও ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠে আসে জুট স্পিনার্স।
বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, স্বল্প মূলধনি হওয়ায় কারসাজিকারীরা খুব সহজেই এসব কোম্পানি টার্গেট করে গেম করতে পারে। আর এক ধরনের অতিলোভী বিনিয়োগকারী স্বল্পসময়ে পুঁজি বাড়ানোর জন্য এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন। যে কারণে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এসব কোম্পানির শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী থাকে। আর দর যখন পড়তে শুরু করে, তখন এসব শেয়ার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন তারা। তখন তারা বিএসইসি, ডিএসইসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করেন।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একজন পরিচালক বলেন, নজরদারিতে যেসব কোম্পানি রয়েছে, তাদের বিষয়ে যে কোনো সময় কঠিন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। যে কারণে আমরা
বিনিয়োগকারীদের আগাম সংকেত দিয়েছি। কিন্তু এরপরও যদি তারা সতর্ক না হন, তবে আমরা দায়ী থাকব না।
একই প্রসঙ্গে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমান বলেন, আমরা বারবারই বিনিয়োগকারীদের ভালো কোম্পানির সঙ্গে, ভালো শেয়ারের সঙ্গে থাকতে বলি। কারণ এসব শেয়ারে অধিক লাভ না হলেও লোকসানের শঙ্কা কম থাকে। কিন্তু তা না করে বিনিয়োগকারীরা ‘জেড’ ও স্বল্প মূলধনি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে ভালোবাসেন। এতে তারা বেশিরভাগ সময়ই লোকসানি হন। তারপরও তারা সতর্ক হন না। তাই বিনিয়োগকারীর স্বার্থের কথা ভেবেই সম্প্রতি ডিএসই ও বিএসইসি দুর্বল সব কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
সত্যনিউজ/এমএস
No comments
Thanks for Commends