-->

ব্রেকিং নিউজ

লক্ষ্মীপুর জেলা সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য


রাজনিউজ জেলা রিপোর্টঃত্রয়োদশ শতাব্দিতে লক্ষ্মীপুর ভুলনা রাজ্যের অধীন ছিল। মুঘল ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিরশাসনামলে লক্ষ্মীপুরে একটি সামরিক স্থাপনা ছিল। ষোড়শ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দি পর্যন্ত এ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে লবন উৎপন্ন হত এবং বাইরে রপ্তানি হত। লবনের কারনে এখানে লবন বিপ্লব ঘটে। স্বদেশী আন্দোলনে লক্ষ্মীপুরবাসী স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করে। এ সময় মহাত্মা গান্ধি এ অঞ্চল ভ্রমণ করেন। তিনি তখন প্রায়ই কাফিলাতলি আখড়া ও রামগঞ্জের শ্রীরামপুর রাজবাড়ীতে অবস্থান করতেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৬সালের জুন মাসে লক্ষ্মীপুর সফরে আসেন।১৯৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এখানে পাক-হানাদার বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে সতের বার যুদ্ধ হয়। এখানে তিনটি স্মৃতি স্তম্ভ, দুইটি গণকবর ও একটি গণহত্যা কেন্দ্র পাওয়া যায়।

লক্ষ্মীপুর নামকরণ হয়েছে তা নিয়ে কয়েকটি মতপ্রচলিত রয়েছে। লক্ষ্মী, ধন-সম্পদ ও সৌভাগ্যের দেবী (দূর্গা কন্যা ও বিষ্ণু পত্মী) এবং পুর হলো শহর বা নগর। এ হিসাবে লক্ষ্মীপুর এর সাধারণ অর্থ দাঁড়ায় সম্পদ সমৃদ্ধ শহর বা সৌভাগ্যের নগরী। ঐতিহাসিক কৈলাশ চন্দ্র সিংহ ‘রাজমালা’ বা ‘ত্রিপুরা’র ইতিহাস লিখতে গিয়ে তৎকালীন নোয়াখালীর পরগণা ও মহালগুলোর নাম উল্লেখ করেছেন। এতে দেখা যায়, বাঞ্চানগর ও সমসেরাবাদ মৌজার পশ্চিমে ‘লক্ষ্মীপুর’ নামে একটি মৌজা ছিল। আজকের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর মৌজাই তৎকালীন লক্ষ্মীপুর মৌজা। আবার অন্যমতে, সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহ সুজা আরাকান পলায়নের সময় ১৬২০ খ্রিস্টাব্দের ৬ মে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি ধাপা ও শ্রীপুর হয়ে ৯ মে ‘লক্ষ্মীদাহ পরগনা’ ত্যাগ করে ভূলুয়া দূর্গের ৮ মাইলের মধ্যে আসেন। ১২ মে ভূলুয়া দূর্গ জয় করতে না পেরে আরাকান চলে যান। সেই লক্ষ্মীদাহ পরগনা থেকে লক্ষ্মীপুর নামকরণ করা হয়েছে বলে কেউ কেউ ধারণ করেন। লক্ষ্মীপুর শহরের পূর্ব পাশে শাহ সুজার নামানুসারে একটি সড়কের নামকরণ করা হয় ‘সুজা বাদশা সড়ক’। বিখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক সানা উল্লাহ নূরী ‘সুজা বাদশা সড়ক’ নামে একটি ইতিহাস গ্রন্থও রচনা করেছেন। ১৬১৪ খ্রিস্টাব্দে মগ ও ফিরিংগীদের মিলিত বাহিনী ভূলুয়া, ভবানীগঞ্জ ও ইসলামাবাদ আগুন দিয়ে পুড়ে দেয়। স্যার যদুনাথ সরকার এ সংক্রান্ত বর্ণনায় লিখেছেন, ইসলামাবাদ চাটগাঁ শহর নয়। ভূলুয়ার পশ্চিমে একটি দূর্গ সমৃদ্ধ শহর। ঐতিহাসিক ড. বোরাহ ইসলামাবাদকে লক্ষ্মীপুর বলে ধারণা করেছেন। এভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় যে, তৎকালীন লক্ষ্মীপুর মৌজার অংশ মেঘনা পাড়ের দুর্গ সমৃদ্ধ কামানখোলাই ইসলামাবাদ নামের মগ ও ফিরিংগীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল। শ্রী সুরেশ চন্দ্রনাথ মুজমদার ‘রাজপুরুষ যোগীবংশ’ নামক গবেষনামূলক গ্রন্থে লিখেছেন দালাল বাজারের জমিদার রাজা গৌর কিশোর রায় চৌধুরী ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী থেকে রাজা উপাধি পেয়েছেন। তাঁর পূর্বপুরুষরা ১৬২৯-১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দালাল বাজার আসেন। তাঁর বংশের প্রথম পুরুষের নাম লক্ষ্মী নারায়ন রায় (বৈষ্ণব) এবং রাজা গৌর কিশোরের স্ত্রীর নাম লক্ষ্মী প্রিয়া। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, লক্ষ্মী নারায়ন রায় বা লক্ষ্মী প্রিয়ার নাম অনুসারে লক্ষ্মীপুরের নামকরণ করা হয়।
আয়তনঃ ১৪৪০.৩৯ বর্গকি. মি.(৫৫৬ বর্গমাইল)
লক্ষ্মীপুর সদর – ৪৮০.৩৫ বর্গকি. মি.
রায়পুর – ১৯৫.৯৮ বর্গকি. মি.
রামগঞ্জ – ১৬৯.৩২ বর্গকি. মি.
রামগতি – ২৭৯.৮৮ বর্গকি. মি.
কমলনগর – ৩১৪.৮৬ বর্গকি. মি.
জনসংখ্যা : ১৭,২৯,১৮৮ জন
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার: ১.৪৮%
জনষংখ্যার ঘনত্ব: ১২০০জন (প্রতি বর্গ কি.মি.)
ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যা:
মুসলমান : ৯৬.৪৫%
হিন্দু : ৩.৪৪%
অন্যান্য : ০.০১%
ধর্মীয় উপাসনালয়:
মসজিদ : ৩৫৩৯ টি
মন্দির : ৪৫ টি
গীর্জা : ১ টি
উপজেলা : ০৫টি
পৌরসভা : ০৪ টি
নগরায়ন : ১৫.২১%
ইউনিয়ন পরিষদ : ৫৮ টি
গ্রাম : ৫৪৭ টি
খানা : ৩,৬৫,৩৩৯ টি
প্রতি খানায় সদস্য : ৪.৭ জন
পেশা :
কৃষি: ৭৩.০০%
শিল্প: ৬.১০%
সেবা: ২০.৮০%
বেকারত্বের হার: ৫.৩৯%
ভূমি সম্পর্কিত তথ্যঃ
উপজেলা ভূমি অফিস : ০৫টি
ইউনিয়ন ভূমি অফিস : ৪৬টি
মৌজা : ৪৫৫ টি
আশ্রয়ণ প্রকল্প : ০৯টি
আবাসন প্রকল্প : ১১টি
আদর্শ গ্রাম : ৪টি
হাটবাজার : ১৫৪ টি
জলমহাল : ৩৭ টি
শিক্ষা সম্পর্কিত তথ্যঃ
শিক্ষার হার: ৪৯.৪ %
পুরুষ: ৪৮.৯% নারী: ৪৯.৮%
প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৭১৩ টি
সরকারি ৫১২ টি
বেসরকারি ১৯৭ টি
কমিউনিটি ৪টি
মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭২ টি
সরকারি ০৩ টি
বেসরকারি ১৬৯ টি
মহাবিদ্যালয়: ২২টি
সরকারি ০৫টি
বেসরকারি ১৭ টি
মাদ্রাসা: ১৯৩টি
ইবতেদায়ী ৬২ টি
দাখিল ৮৩ টি
আলিম ২৪ টি
ফাজিল ১৭ টি
কামিল ০৭ টি
অন্যান্য
আইন কলেজ : ১টি
হোমিও কলেজ : ১টি
ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক কলেজ : ১টি
পিটিআই : ১টি
কারিগরী স্কুল ও কলেজ : ৪টি
ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট: ১টি
কৃষি সম্পর্কিত তথ্যঃ
কৃষি জমি
আবাদী: ৯৪,৩২৪ হেক্টর
অনাবাদী: ১৪৫ হেক্টর
ফসল:
ধান : ৩,৬৭,৮৩৫ মে. টন
সয়াবিন : ৭৭,১০৫ মে. টন
সুপারি : ১২,৮৬২ মে. টন
নারিকেল : ৯,২৪০ মে. টন
চিনাবাদাম : ৯,৩৯০ মে. টন
এছাড়া সরিষা, পাট, গম, মরিচ, আলু, ডাল, ভুট্টা, নানা রকম মৌসুমী ফল
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সম্পর্কিত তথ্যঃ
মৎস্য অভয়াশ্রম : ১টি
পশু হাসপাতাল : ১টি
দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র : ১টি (রায়পুর)
ইলিশ আহরণ : ১২,০০০ মে.টন
অন্যান্য মৎস্য আহরণ : ১৫,০০০ মে.টন
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যঃ
হাসপাতাল : ১টি
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : ৪টি
কমিউনিটি ক্লিনিক : ১৪৯ টি
পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণকারীর হার: ৭৪%
গড় প্রজনন হার : ২.৬ জন
স্যানিটেশন : ৭৪.৩%
যোগাযোগ সম্পর্কিত তথ্যঃ
সড়ক: ৫৪৩১ কি.মি.
পাকা রাস্তা ১৫৩৬ কি.মি.
আধাপাকা ১৮১ কি.মি.
কাঁচা রাস্তা ৩৭১৪ কি.মি.
নৌপথ: ১১৮ বর্গ কি. মি.
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত তথ্যঃ
কারাগার : ১টি
থানা : ৫টি
পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র : ৪টি
পুলিশ ফাঁড়ি : ৪টি
হাইওয়েপুলিশ ফাঁড়ি : ১টি
নৌ ফাঁড়ি : ১টি
অন্যন্য তথ্যাবলী সম্পর্কিতঃ
স্থানীয় পত্র-পত্রিকা
দৈনিক : ১৭টি
সাপ্তাহিক : ০৫টি
মাসিক : ০৬টি
সরকারি গ্রন্থাগার : ১টি
গণমিলনায়তন : ১টি
সিনেমা হল : ১৩টি
শিল্প প্রতিষ্ঠান : ১টি (রায়পুর)
এতিমখানা : ৫২টি




/এমএস

No comments

Thanks for Commends