-->

ব্রেকিং নিউজ

ঢাকায় ভয়ংকর ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে ১৭টি পরামর্শ জেনে নিন।

সত্যনিউজ:
১. ঢাকায় এলে কখনো বাসে জানালার পাশে বসে মোবাইল টিপবেন না। কখন নিয়ে যাবে, টের পাবেন না। শুধু বাস না, কার, উবার, রিকশা কিছুই নিরাপদ না। সিএনজির ছাদ কেটেও মোবাইল নিয়ে নেয়। মোবাইল পকেটে কিংবা ব্যাগের ভেতর রাখুন। নাকে বা কানে সোনার গহনা না পরলেই ভালো করবেন।
sottonews_dhaka 

২. রিকশাতে বসে কোলে ব্যাগ রাখবেন না। পাশ থেকে মটরসাইকেল কিংবা গাড়িতে করে এসে হ্যাঁচকা টান দেবে। শক্ত করে ধরে রাখলে আপনি রাস্তায় গিয়ে পড়বেন এবং আপনাকে রাস্তায় ছেঁচড়িয়ে অনেক দূর টেনে নিয়ে যাবে। তাতে মাথার এবং মেরুদন্ডের মারাত্মক ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকবে। ব্যাকপ্যাক ব্যাবহার করুন তবে সেটা পিঠে না ঝোলানোই ভালো। ব্যাগ দুই পায়ের ফাকে রেখে পা দুটো দিয়ে আড়াল করে রাখুন।

৩. রাস্তায় কিছু খাবেন না। কিছুই না। দূরপাল্লার যাত্রা হলে বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসুন অথবা প্যাকেটজাত কিছু খান। পাশের যাত্রী কিছু দিলে খান না, তাতে কি? হয়তো যে পানি বা ডাব কিনলেন, বা অন্যকিছু তাতেই থাকতে পারে ঔষধ মেশানো। প্রতারকরা অনেক চালাক এখন। তাই কোনো রকম খোলা খাবার খাবেন না।

৪. ট্রেন জার্নিতে দরজার পাশে, দুই বগির পাশে দাড়াবেন না। কিংবা যতোই ভালো লাগুক দরজায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাবেন না। ট্রেনের ছাদে চলাচল যতোই রোমান্টিক লাগুক, যে গ্যাং গুলো ছিনতাই করে, তারা খুবই নির্দয় এবং বেপরোয়া। এদের শিকার হওয়া অনেক যাত্রীর লাশ পাওয়া যায় সারাদেশের ট্রেন লাইনের আশেপাশে। বেশিরভাগই বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে ফেলা হয়।

৫. কপাল খারাপ হলে ছিনত্যাইয়ের শিকার হবেন। ধরা যাক হলে কি করবেন? ছিনতাইকারী বেশ কয়েকজন। আপনি একা, চারপাশে কেউ নেই। আপনাকে ঘেরাও করে রেখেছে। আপনার পকেটে দামী ফোন। এসবক্ষেত্রে ভালো হয় ফোনের মায়া ত্যাগ করা। কারণ যারা ছিনতাইকারী তাদের বেশিরভাগই নেশাগ্রস্থ। এরা খুব একটা চিন্তা করেনা কিছু একটা করে বসার আগে। তাই খুব বেশি সাহসী হতে যাবার কোনোই দরকার নেই। বেঘোরে প্রাণটা যাবে। আপনার জীবনের দাম পৃথিবীর যেকোনো দামী ফোনের চেয়েও অনেক বেশি।

৬. বান্ধবী বা মেয়ে বন্ধুর সাথে রেস্টুরেন্ট বা পার্কে যাচ্ছেন। হঠাৎ দেখবেন আপনার চারপাশে একদল ছেলের আবির্ভাব। এরা কিন্তু একটা গ্যাং। দেখবেন আপনাদের নিয়ে নানান রকম আজে বাজে কথা বলছে, বাজে ইঙ্গিত দিচ্ছে। আসলে ওরা চাইছেই আপনাকে উত্তেজিত করে একটা ঝামেলায় বাধাতে। এতে ওদের লাভ। সেটা কিরকম? ধরাযাক আপনি মাথা গরম করে ঝামেলায় জড়ালেন। ওরা আপনাকে অপমান করেছে বলে আপনি পাল্টা কিছু বললেন বা করলেন। এই পেয়ে গেলো সুযোগ। ওরা তখন বাইরে থেকে নেতা গোছের কাউকে ধরে আনবে। যিনি এসেই আপনাকে আপনার বান্ধবীর সামনেই নানান রকমভাবে জেরা করবে। তারপর বিচারে আপনাকেই দোষী বানিয়ে দেবে। অত:পর মিটমাট করার নাম করে আপনার কাছ থেকে জরিমানা বাবদ টাকা পয়সা কিংবা দামী ঘড়ি, ফোন অথবা ল্যাপটপটা রেখে দেবে। তাই এসব জায়গায় কথা বাড়ানো মানেই ঝামেলা ডেকে আনা। আর নির্জন জায়গা হলে এদের দেখা মাত্রই সরে পড়ুন।

৭. ভোররাতে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন। সাহস দেখিয়ে রাস্তায় নেমে পড়তে যাবেন না। বাসস্টপে বা ট্রেন স্টেশনেই অপেক্ষা করুন। সকালে যখন রাস্তায় যথেস্ট মানুষ থাকবে তখন বের হন।

৮. ট্রেন স্টেশনে বা সদরঘাটে নিজে নিজে বয়ে নিয়ে যেতে পারেন না এমন বোঝা নিয়ে এসেছেন তো মরেছেন। মাথায় করে পৌঁছে দেয়ার নামে আপনার কাছ থেকে চাদার মতো ৪০০-৫০০ টাকা খসিয়ে ছাড়বে কুলিরা। তাই সাবধানে থাকুন, দরদাম করে তারপর কুলি ঠিক করুন।

৯. নিউমার্কেট বা নীলক্ষেতের মত জায়গায় কেনা কাটা করতে গেলে খুবই সাবধান। কৌতুহলের বশে কোনো কিছুর দাম জিজ্ঞেস করলেও এখানে আপনাকে পাল্টা দাম বলার জন্য জোরাজুরি করবে। মনে রাখবেন এখানে মেজাজ দেখিয়ে লাভ নাই, এখানকার দোকানীরা সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করে। তাছাড়া সাথে কোনো নারী থাকলে তো আরো বেশি ঝামেলা করবে। এসব পরিস্থিতিতে জোরাজুরি করলে যা হয় একটা দাম বলুন। দরকার হলে অকল্পনীয় রকম কম দাম বলুন। আপনার সামর্থ্য এবং জিনিসপত্রের মূল্যজ্ঞান নিয়ে ওরা অপমান করবে। যতোই অপমানিত লাগুক আপনি সরে যান। এসব জায়গায় কোনো ক্রেতা ঝামেলা করে মার না খেয়ে বাড়ি ফেরেনা সাধারণত।

১০. বাসে উঠলে প্যান্টের পিছনের পকেটে ওয়ালেট বা সামনের পকেটে মোবাইল রাখা নিরাপদ না। সামনের পকেটে এসব জিনিস রাখুন। অথবা সাথে ব্যাগ থাকলে ব্যাগের ভেতর ফোন আর মানিব্যাগ রেখে চেইন ভালো করে লাগিয়ে দিন। ব্যাগের দিকে নজর রাখুন।

১১. বাণিজ্যমেলা, চিড়িয়াখানা, চন্দ্রিমা উদ্যান কিংবা শিশুপার্কে গিয়ে দাম খুব ভালো করে না জেনে কিচ্ছু খাবেন না। দেখা যাবে একটা সিংগাড়া কিংবা আধা প্লেট বিরিয়ানি খাইয়ে ৪০০-৫০০টাকার বিল ধরিয়ে দেবে আপনাকে। শিশু পার্ক বা চন্দ্রিমা উদ্যানে দাম জিজ্ঞাসা না করে ফুচকা খাবেন না। কেননা খেয়ে ফেলার পর ফুচকার দাম ১০০/১৫০ বললে কিছু করার থাকে না। খাবার আগে দাম জিজ্ঞাসা করুন, এটা খুব-ই ভালো একটা অভ্যাস।

১২. রাতে ঘোরাঘুরি না করাই ভালো। ছিনত্যাইকারী ধরলেতো কথাই নেই। এমনকি পুলিশ ধরলেও বিপদ। যতই নির্দোষ হন, পুলিশ যদি বুঝতে না চায় আর আপনাকে আটকে রাখার নিয়ত যদি থাকে, তাহলে আপনার কিছুই করার থাকবে না। তাই ভালো হয় খুব জরুরি দরকার না হলে রাতে রাস্তায় না বের হওয়া। আর নিতান্তই যদি বের হতে হয় তাহলে বাড়ির লোকজনকে জানিয়ে রাখুন কোথায় যাচ্ছেন। বিপদে পড়লে কাকে কাকে ফোন করতে হবে সেটাও জেনে নিন।

১৩. বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছেন, হঠাৎ একটা মাইক্রোবাস এসে থামলো আপনার সামনে। সেটা প্রাইভেট গাড়িও হতে পারে। আপনাকে চালক বলবে সে গ্যারেজে ফেরার পথে বাড়তি কিছু ‘ট্রিপ’ নিচ্ছে। খুব অল্প ভাড়ায় আপনাকে পৌছে দেবার কথা বলবে। আপনি উঠবেন না। মেয়ে হলেতো আরো আগে না। যতোই আরামের ভ্রমনের নিশ্চয়তা দিক, আর আশে পাশের সিটের যাত্রীদের যতই নির্ভার নিশ্চিন্ত লাগুক। উঠবেন না। কেননা এরকম একটা প্রস্তাবে রাজি হলে আপনিই হতে পারেন ছিনতাই, ধর্ষণ বা কিডন্যাপিংয়ের শিকার। রাতের বেলা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যাবহার করুন যেটায় লোকজন আগে থেকেই উঠে আছে। আপনার গন্তব্য যদি শেষ স্টপেজে হয় তাহলে আশে পাশের যাত্রীদের কে জিজ্ঞেস করুন তারা কেউ অতদূর যাচ্ছে কিনা। গেলে তাদের সাথে একসাথে নামুন।

১৪. রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। হঠাৎ ভদ্রবেশি কেউ এসে, সে হতে পারে ছেলে বা মেয়ে বা বয়ষ্ক পুরুষ কিংবা মহিলা, আপনার ফোন চাইলো। বললো, উনার কোন একটা সমস্যার কথা, এক্ষুনি একটা ফোন দিতে হবে কাউকে। আপনি বিশ্বাস করে ফোনটা দিলেন, দেখবেন পরক্ষণেই হুট করে বাইকে উঠে হাওয়া।

১৫. সাথে সবসময় আইডি কার্ড রাখুন। বিপদে পড়লে খুব কাজে দেয়। হয়তো কোনো দূর্ঘটনা ঘটেছে, অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন, তখন যারা উদ্ধার কাজে আসবে তারা আপনার পরিবার পরিজনকে জানাতে পারবে।

১৬. বড় অংকের নগদ টাকা কখনই একসাথে নিয়ে চলাফেরা করবেন না। চেষ্টা করুন নগদ লেনদেন আপনার ব্যাংকের কোনো একটি শাখায় সারতে যাতে করে লেনদেন হয়ে গেলেই টাকাটা আপনার একাউন্টে জমা দিয়ে দিতে পারেন।

১৭. নতুন বিবাহিত হলে এবং স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ঘুরতে এলে কাবিননামার ছবি মোবাইলে তুলে রাখুন। কখন কোন কাজে লেগে যাবে বুঝতেও পারবেন না।

সবচেয়ে বড় কথা, সবসময় সতর্ক থাকুন, চোখ কান খোলা রাখুন। মনে রাখবেন আপনার নিরাপত্তা আপনারই হাতে।

নিজে সতর্ক থাকুন এবং আপনজনকে সতর্ক করতে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।

1 comment:

Thanks for Commends